আসানসোল/ধানবাদ:
বেঙ্গল–ঝাড়খণ্ড সীমান্ত জুড়ে সক্রিয় কয়লা মাফিয়া সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ফের বড়সড় অভিযান চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। শুক্রবার সকাল থেকেই ধানবাদে কয়লা বাণিজ্য ও আউটসোর্সিং–যুক্ত একটি বড় কোম্পানির একাধিক ঠিকানায় একযোগে তল্লাশি শুরু করে সংস্থা। যার সঙ্গে শিল্পাঞ্চলের ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে শিলপাঞ্চল–সহ পুরো কয়লা বেল্টে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযানের খবর প্রকাশ হতেই অবৈধ কয়লা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বহু ‘পরিচালক–অপারেটর’ এলাকা ছেড়ে গা–ঢাকা দিয়েছে বলে সূত্রের দাবি।
🔍 ডেকো আউটসোর্সিং অপারেটর মনোজ আগরওয়ালের বাড়িতে ইডির আকস্মিক হানা
সকাল প্রায় ৭টা ৩০ মিনিটে, ইডির গাড়ি পৌঁছয় ধানসাড়ের মনোজ আগরওয়ালের বাসভবনে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী পুরো বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এরপর ইডি অফিসাররা ঘরে ঘরে ঢুকে
- আর্থিক নথি,
- ইলেকট্রনিক ডিভাইস,
- ব্যাংক লেনদেনের রেকর্ড
তল্লাশি করতে শুরু করেন।
এ অভিযানের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটি মূলত বেআইনি কয়লা বাণিজ্য ও মানি লন্ডারিং তদন্তের অংশ।
⚡ ধানবাদ–শিল্পাঞ্চলে তীব্র আলোড়ন
শুক্রবার সকালে হানার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ধানবাদ থেকে আসানসোল–দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল পর্যন্ত ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। কয়লা দুনিয়ায় ইডির তৎপরতা নিয়ে সর্বত্র জোর চর্চা চলছে।

📂 গত মাসের ৪৪ জায়গায় হওয়া হানার সূত্র ধরে নতুন অভিযান
সূত্রের দাবি—গত মাসে ঝাড়খণ্ড–বঙ্গের মোট ৪৪টি জায়গায় ইডির তল্লাশিতে যে তথ্য ও নথি উদ্ধার হয়েছিল, তার ভিত্তিতেই এই নতুন অভিযান।
তল্লাশি দল কয়েক ঘণ্টা ধরে অবস্থান করছে, এবং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সংস্থা।
🔥 KK–LB নেক্সাসে ইডির নজর
গত ২১ নভেম্বর ইডি একযোগে ধানবাদ, ডুমকা, আসানসোল, দুর্গাপুর, পুরুলিয়া ও কলকাতায় কয়লা ও বালি মাফিয়াদের ৪৪টি ঠিকানায় অভিযান চালায়।
জানা যায়, এই পুরো সিন্ডিকেটের মূল চক্রধার বলে পরিচিত KK–LB নেক্সাস।
তল্লাশিতে উদ্ধার হয়েছিল—
- ১৪ কোটি টাকার নগদ,
- ১২০টি জমির দলিল,
- ৬ কোটির বেশি মূল্যের সোনার গয়না,
- প্রচুর ডিজিটাল ডিভাইস ও নথি।
BCCL–এর টেন্ডারে অনিয়ম, বেআইনি কয়লা ট্রেড, জাল GST লেনদেন—সব মিলিয়ে বিশাল আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছিল ইডি।
🧩 জড়িত ব্যক্তি ও জায়গাগুলির মধ্যে ছিলেন—
- কৃষ্ণ মুরারি কৈল (বিল্লু ওরফে KK)
- নরেন খারকা ওরফে নারায়ণ নন্দা
- লোকেশ সিং
- নিরোধ বরন মণ্ডল
- পরবেজ সিদ্দিকি সহ আরও অনেকে
এদের বেশিরভাগই দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকা জুড়ে কয়লা চক্র পরিচালনা করছিল বলে অভিযোগ।
🛑 স্থানীয়দের উদ্বেগ বাড়ছে
ইডির এই ধারাবাহিক অভিযান শিল্পাঞ্চলের অনৈতিক কয়লা ব্যবসা সম্পর্কে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। স্থানীয়দের মতে—”সমগ্র সিন্ডিকেটের মূল শিকড় আরও গভীরে, এবং তদন্তে আরও বড় নাম সামনে আসতেই পারে।”












