কলকাতা/আসানসোল:
পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে কয়লা ও বালি মাফিয়াদের সাম্রাজ্যে ইডির নজিরবিহীন তল্লাশিতে ফাঁস হলো চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির চিত্র। শনিবার রাত পর্যন্ত চলা এই অভিযান শুধু সিন্ডিকেটের নয়, প্রভাবশালী রাজনৈতিক-ব্যবসায়ী মহলের আঁতাতকেও প্রকাশ্যে আনছে।
ইডি সূত্র অনুযায়ী, এসব মাফিয়া শুধু বেআইনি কয়লা উত্তোলনই করত না, বরং জিএসটি রিটার্ন জাল করে বৈধভাবে বাজারে চালানও তৈরি করত। দেশের অন্যতম বড় রাজস্ব জালিয়াতির ঘটনাগুলোর একটি বলে মনে করা হচ্ছে এটিকে।
“যেখানে কোটি টাকার কয়লা মেপে দেওয়া হচ্ছে, সেখানে কেনার হিসাব নেই—এটাই সবচেয়ে বড় সন্দেহ।”
—ইডি কর্মকর্তা
পুরুলিয়ার কোক প্ল্যান্ট, জামুড়িয়ার গোপন ডিপো, দুর্গাপুরের বিভিন্ন ইউনিট—সব জায়গায় চলে জাল নথি তৈরির কারখানা। বেআইনি কয়লাকে কাগজে ‘বৈধ’ বানিয়ে বড় বড় ফ্যাক্টরিতে বিক্রি করা হতো।
বড় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চলত সিন্ডিকেট
তদন্তে উঠে আসছে—এই সিন্ডিকেট একা চলে না। “উচ্চপর্যায়ের প্রভাবশালী মানুষের সাপোর্ট ছাড়া এত বড় চক্র চলতে পারে না”—এমনটাই অনুমান ইডির।
কো-অর্ডিনেটেড নেক্সাস: ইডি + আয়কর + জিএসটি
জিএসটি ফাঁকি ধরা পড়তেই ইডি এবার আয়কর দফতর ও জিএসটি ইন্টেলিজেন্সকেও তদন্তে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সব নথির পূর্ণাঙ্গ অডিট হবে। এরপর বেরিয়ে আসবে প্রতিটি স্তরের আসল চিত্র।
রাজ্যের ২৪টি জায়গায় মেগা রেইড
কুলটি, রানিগঞ্জ, পাণ্ডেশ্বর, দুর্গাপুর, পুরুলিয়া, হাওড়া, কলকাতা—বড় পরিসরে ২৪টি স্থানে তল্লাশি। আটক হলো বহু নথি, কম্পিউটার হার্ডডিস্ক, ব্যাংক ডিটেইলস।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ঝড়
চক্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক বড় নামের উল্লেখও পাওয়া গেছে, যাদের গ্রেফতারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
কোথায় তল্লাশি?
পশ্চিমবঙ্গের কুলটির দেবুঢিহ চেকপোস্ট, রানিগঞ্জের সদানন্দ চক্রবর্তী লেন, পাণ্ডেশ্বরের খট্টিডিহ, দুর্গাপুরের ৯টি জায়গা, পুরুলিয়ার ২টি কোক প্ল্যান্ট, হাওড়া ও কলকাতার মোট ২৪টি জায়গায় তল্লাশি চলে। বাড়ি, অফিস, বেআইনি টোল বুথ, কোক ফ্যাক্টরি—সবখানে তল্লাশি করেছে ইডি।
যাদের নামে অভিযোগ
- নারায়ণ নন্দ ওরফে নরেন্দ্র খাড়কা
- কৃষ্ণ মুরারি কায়াল ওরফে বিল্লু
- যুধিষ্ঠির ঘোষ
- রাজ কিশোর যাদব
- লোকেশ সিংহ
- শ্যাম সুন্দর ভেলোটিয়া
- চিন্ময় মণ্ডল
- নীরদ বরণ মণ্ডল
- রামধনী জয়সওয়াল
- পারভেজ সিদ্দিকি
- সুশান্ত গোস্বামী
- শশী যাদব
- সঞ্জয় ঠঠেরা












