আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান:
আসানসোলে ৪৫০ কোটি টাকার ভয়াবহ আর্থিক প্রতারণা ঘিরে উত্তাল রাজনীতি! বুধবার আসানসোল রেলওয়ে ক্রসিং সংলগ্ন জাহাঙ্গিরি মহল্লায় তৃণমূল সংখ্যালঘু নেতা সাকিল আহমেদের বাড়ি ঘেরাও করে ক্ষুব্ধ আমজনতা। অভিযোগ, তাঁর ছেলে তাহসিন আহমেদ গত তিন বছরে ৩,০০০-রও বেশি সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করে অন্তত ৪৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে!
এই ঘটনায় বারতল্লা এলাকার মউতুষি দত্ত আসানসোল উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাহসিন তাঁর কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা প্রতারণা করে নিয়েছে।
একইভাবে অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ আধিকারিক রবীন্দ্র সিং বলেন,
“প্রথমে ৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করি। ভালো রিটার্ন দেখে পরে আরও টাকা দিই। সবমিলিয়ে প্রায় ৪১ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ করি। এখন আর এক টাকাও পাচ্ছি না।”
তাঁর দাবি, তাঁর মতো আরও বহু মানুষ জমি বিক্রি করে, ঋণ নিয়ে বা মেয়ের বিয়ের টাকার জোগাড় ভেঙে এই তথাকথিত বিনিয়োগে টাকা ঢেলেছেন।
🌀 বিজেপির আক্রমণ: “এটা তৃণমূল স্পন্সরড চিটফান্ড স্ক্যাম!”
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি লেখেন,
“আসানসোলে ৩৫০ কোটি টাকার বিশাল চিটফান্ড কাণ্ড, অভিযুক্ত তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সহ-সভাপতির ছেলে তাহসিন আহমেদ। ১ লক্ষ টাকায় ২০ মাসে ২.৮ লক্ষ টাকার লোভ দেখিয়ে হাজার হাজার পরিবারকে সর্বস্বান্ত করেছে। এটা তৃণমূল স্পন্সরড দুর্নীতি!”
তিনি আরও দাবি করেন,
🔴 তাহসিন আহমেদ ও তার দলের অবিলম্বে গ্রেফতার চাই।
🔴 SEBI ও ED দিয়ে তদন্ত হোক — টাকা কোথায় গেল, কার কাছে গেল?
🔴 সমস্ত ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
🗣️ তৃণমূলের পাল্টা ব্যাখ্যা: “সে আর দলে নেই!”
তৃণমূল সংখ্যালঘু ফেডারেশনের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি মাহফুজুল হাসান সাংবাদিক বৈঠকে বলেন,
“সাকিল আহমেদ আগে আমাদের সংগঠনের সহ-সভাপতি ছিলেন। কিন্তু তাঁর ছেলে প্রতারণা করার পরই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন তাঁর দলের সঙ্গে কোনো যোগ নেই।”
💬 AIMIM-এর প্রশ্নে নতুন বিতর্ক!
এদিন BNR মোরের এক কফিহাউসে AIMIM জেলা সভাপতি দানিশ আজিজ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন,
“তৃণমূল নেতার ছেলে নিরীহ যুবকদের প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা তুলেছে। এখন তৃণমূল বলছে ‘সে দলে নেই’ — এটা জনগণকে বোকা বানানোর কৌশল।”
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন,
“যদি তাহসিন পালিয়ে যায়, তাহলে কি মলয় ঘোষঠাকুর (মন্ত্রী মালয় ঘটক) ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেবেন? কেন তাঁর বাড়িতে পুলিশ প্রোটেকশন দেওয়া হচ্ছে?”
⚠️ পরিস্থিতি উত্তপ্ত: পুলিশের বাড়তি মোতায়েন
পুরো এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা। পুলিশ বাড়তি নিরাপত্তা মোতায়েন করেছে। স্থানীয়রা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, টাকা ফেরত না মিললে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে।

















