আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান:
রবিবার মহরমের পবিত্র দিনে আসানসোল শহরে চোখধাঁধানো দৃশ্যের সাক্ষী রইল হাজার হাজার মানুষ। ধর্মীয় রীতিনীতি, সামাজিক সম্প্রীতি ও অ্যাডভেঞ্চার আর্টের এক দুর্লভ সম্মিলন দেখা গেল শহরের রাস্তাঘাটে। শহরের বিভিন্ন আকড়া কমিটির পক্ষ থেকে লাঠি, তরোয়াল ও আগুনের খেলা সহ বহু শৌর্যপ্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে দর্শকদের মুগ্ধ করা হয়।
হিরাপুর, হ্যাটটন রোড, রেলপাড়, জিটি রোড সহ বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা যায়, যারা করতালিতে স্বাগত জানায় এই সাহসী প্রদর্শনীগুলোকে।
🎪 মার্কেট কমিটির সেবার নজির
আসানসোল মার্কেট কমিটির পক্ষ থেকে মহরম উপলক্ষে বিশেষ স্বাগত শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানে পানীয় জল, শরবত ও প্রাথমিক চিকিৎসার নিখরচায় ব্যবস্থা ছিল। এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দেন কমিটির সদস্যরা:
- পিন্টু গুপ্তা
- রাজেশ সিং
- মুন্না শ’
- অমিত সাহা
- সাগির আলম
- দীপক পাশোয়ান
- রোহন কুমার
- চন্দন পাশোয়ান
- রিঙ্কু গুপ্তা
- মোহাম্মদ নদীম
- সাবানা আজমি
- অমিত বর্মন
- দিনেশ কুমার
- বিকি শর্মা
- মনোজ শর্মা
- অজিত পাশোয়ান
কমিটির লক্ষ্য ছিল শুধুই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ নয়, বরং সামাজিক ভ্রাতৃত্ব ও মানবতার বীজ রোপণ।
🧒👳♂️ ছোট থেকে বড়, সকলের অংশগ্রহণ
শুধু যুবক নয়, শিশুরা এবং প্রবীণরাও এই মহররম আকড়ায় অংশগ্রহণ করেন আত্মিক শ্রদ্ধা ও ভক্তিসহকারে। প্রায় ৪০ জন শিশু-কে ‘লিটল চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয় তাঁদের অসাধারণ পারফর্ম্যান্সের জন্য।
🛡️ কড়া নিরাপত্তা, পুলিশ-স্বেচ্ছাসেবকদের তৎপরতা
শহর জুড়ে পুলিশ প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকরা মিলে চমৎকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
🎖️ অসাধারণ আকড়া পারফর্ম্যান্স: পুরস্কার তালিকা
আসানসোল শহরের বিভিন্ন আকড়া কমিটিকে তাদের অসাধারণ উপস্থাপনার জন্য মোমেন্টো ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। বিজয়ী আকড়াগুলি:
🥇 প্রথম পুরস্কার: আকড়া নম্বর ১৯, শক্তারা মহল্লা, এন.এস. রোড, আসানসোল
🥈 দ্বিতীয় পুরস্কার: আকড়া নম্বর ১৩, গাড়িয়া মহল্লা, মুন্সী বাজার, আসানসোল
🥉 তৃতীয় পুরস্কার: আকড়া নম্বর ১৭, মুজুরি রেলপাড়, আসানসোল
🏆 সেরা তাজিয়া পুরস্কার: শেরতালাব রেলপাড় আকড়া
🌟 সেরা প্রতিভার আকড়া: কমলিয়া তালাব আকড়া
🤝 মাননীয়দের উপস্থিতিতে উৎসবের মহিমা বৃদ্ধি
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বহু বিশিষ্টজন ও জনপ্রতিনিধি:
- রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক
- উপ-মেয়র ওয়াসিম উল হক
- প্রাক্তন কাউন্সিলর অভিজিৎ ঘটক
- মেয়র কাউন্সিল সদস্য গুরুদাস চ্যাটার্জী
- প্রবীণ নেতা রাজেশ তিওয়ারি
- সমাজকর্মী মিঠাই ভাই
- কাউন্সিলর হাসুতুল্লাহ ওরফে বাপ্পি দা
- নবীন সমাজকর্মী দিব্যেন্দু ভগত
সকলেই বলেন, “এই ধরনের অনুষ্ঠান সমাজে সম্প্রীতির বার্তা দেয় ও ভ্রাতৃত্বের উদাহরণ স্থাপন করে।”
📢 শেষ কথা:
আসানসোলের এই মহরম উৎসব ছিল এক অনন্য নজির—শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরকে একত্রিত করে সমাজে শান্তি, ভালোবাসা ও সাহসিকতার বার্তা দিল এই আয়োজন।