📅 রথযাত্রা শুরু ২৭ জুন, পড়ুন গণেশ ভক্তের এক বিস্ময়কর কাহিনি
📍পুরী | ২০২৫
এই বছর ২৭ জুন ২০২৫ থেকে শুরু হতে চলেছে জগন্নাথদেবের মহারথযাত্রা, যা ৫ জুলাই শেষ হবে। এই সময় পুরী শহর ভক্তি, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির অপূর্ব মিলনে মেতে উঠবে। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই রথযাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক প্রাচীন কাহিনি, যেখানে ভগবান জগন্নাথ নাকি গজানন রূপ ধারণ করেছিলেন?
🐘 যখন ভগবান ধারণ করলেন গজানন রূপ
১৬শ শতকে মহারাষ্ট্রের এক গ্রামে বাস করতেন গণপতি ভট্ট নামে এক প্রতিমাশিল্পী, যিনি ছিলেন গণেশ ভক্ত। তিনি তীর্থযাত্রায় বেরিয়ে পড়েন এবং শেষে পৌঁছান পুরীতে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখেন গণেশের কোনো মন্দির নেই। এতে হতাশ হয়ে তিনি ঠিক করেন নিজেই গণেশের মূর্তি গড়বেন।
কিন্তু যখন তিনি মূর্তি গড়তে শুরু করেন, তখন আশ্চর্য কিছু ঘটতে থাকে—কখনও মূর্তির চোখ খুব বড় হয়ে যায়, কখনও হাতে উঠে আসে বাঁশি। এক অচেনা ব্রাহ্মণ তখন বলেন:
“মন যে রূপ দেখায়, তাকেই গড়ো।”
ধ্যানে গণপতি ভট্ট দেখতে পান—এক বড় হাসিমুখ, বাঁশি, এবং জগন্নাথের রূপ। এই কারণেই জগন্নাথদেবের মূর্তি অনেক সময় গণেশ ও কৃষ্ণর সংমিশ্র অবতার বলে মনে হয়।
🎡 রথযাত্রা ২০২৫: ভক্তির মহা উৎসব
পুরীর রথযাত্রায় এই বছরও বিশাল রথে চড়ে ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা গুণ্ডিচা মন্দিরে যাবেন। সেখানে এক সপ্তাহ থেকে তাঁরা আবার ফিরবেন শ্রীমন্দিরে। প্রতি বছর রথ নতুন করে তৈরি হয়, যা নিজেই এক শিল্পকলার নিদর্শন।
🛡️ নিরাপত্তায় বহু সংস্থার অংশগ্রহণ
রথযাত্রার আগে ১১টি সংস্থা মিলে একাধিক মক ড্রিল করে যাতে কোনো আপৎকালীন পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। পুরীর এসপি বীনীত আগরওয়াল জানান, এটি ছিল সন্ত্রাসবাদ বিরোধী প্রস্তুতি মহড়া।
💦 স্নানপূর্ণিমার মহত্ব
রথযাত্রার আগে স্নানপূর্ণিমা উপলক্ষে ভগবান জগন্নাথ ও তাঁর ভাইবোনদের ১০৮ কলস জল দিয়ে স্নান করানো হয়। এটি শুধু আধ্যাত্মিক গুরুত্ব রাখে না, বরং রথযাত্রার সূচনার পূর্বসংকেতও বহন করে।
📜 জগন্নাথধাম – ধরিত্রীর বৈকুণ্ঠ
পুরীকে বলা হয় পুরুষোত্তম পুরী। এটি হিন্দু ধর্মের চার ধামের অন্যতম—বদ্রীনাথ, দ্বারকা, রামেশ্বরম ও জগন্নাথপুরী। বলা হয়, ভগবান জগন্নাথ ভক্তদের চোখের মধ্যে নিজেকে প্রতিস্থাপন করেন, তাই তাঁর চোখ এত বড়।
🔚 উপসংহার:
পুরীর রথযাত্রা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি ভক্তি, ঐতিহ্য ও নিরাপত্তার এক অপূর্ব মেলবন্ধন। গণপতি ভট্টের গল্প ও জগন্নাথের গজানন রূপ এই উৎসবকে করে তোলে আরও রহস্যময় ও আবেগপূর্ণ।