রানীগঞ্জ: রানীগঞ্জের বল্লভপুর অঞ্চলে বালু খনির দখল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ভেতর দলীয় বিবাদ ফের প্রকাশ্যে এসেছে। আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের রানীগঞ্জ বল্লভপুর এলাকায় তৃণমূলের দুই শাখার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা টানাপোড়েন এখন বিপজ্জনক মোড় নিয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, শনিবার রাতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতি হয়, যার ফলে বল্লভপুর ফাঁড়ি এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর পরেই রানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এলাকাজুড়ে যে কোনও অনভিপ্রেত পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ টহল জোরদার করেছে। স্থানীয়দের মতে, কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থা বল্লভপুর এলাকার দামোদর নদীর ঘাটে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করেছে। এই কাজের সাথে যুক্ত থাকায় দুই স্থানীয় তৃণমূল শাখার মধ্যে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াই শুরু হয়েছে। এর মধ্যে একপক্ষ ড্রেজিং কাজকে সমর্থন করছে, অন্যপক্ষ বিরোধিতা করছে, যার ফলে ড্রেজিং কাজও ব্যাহত হচ্ছে।
দখলদারি ও লাভের ভাগ নিয়ে লড়াই: অগ্নিমিত্রা পাল
এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “তৃণমূলের নেতারা নিজেরাই অবৈধ বালু ও কয়লা সিন্ডিকেট নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধে লিপ্ত হয়েছে। এটা শুধু ক্ষমতা দখলের লড়াই নয়, বরং অবৈধ লাভের ভাগের জন্য তৃণমূল নেতাদের অন্তঃদ্বন্দ্ব। এমন ঘটনা জনসাধারণের কাছে ভুল বার্তা দিচ্ছে এবং তারা দেখছে যে তৃণমূল নেতারা জনগণের সেবার পরিবর্তে ব্যক্তিগত স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এই মনোভাব স্পষ্ট করছে যে, তৃণমূলের মূল লক্ষ্য ক্ষমতা ও অবৈধ সুবিধা লাভ।” তিনি আরও বলেন, “তৃণমূলের সময়সীমা আর মাত্র এক বছর, আর এর বিরুদ্ধে জনগণ পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে জবাব দেবে।”
দলের মর্যাদা নষ্টকারীদের ক্ষমা করা হবে না: দাসু
এই বিতর্ক নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য নেতা ভি শিবদাসান দাসু বিজেপির অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “বিজেপির সমালোচনায় তৃণমূলের কিছু আসে যায় না। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।” দাসু আরও জানান, “তৃণমূল এই বিষয়ে সম্পূর্ণ সতর্ক এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। যারা দলের সম্মানহানি করছে তাদের কোনও ভাবেই ক্ষমা করা হবে না। দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” দুই পক্ষই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সমর্থন জোগাড়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং নিজ নিজ যুক্তি পেশ করছে। মনে করা হচ্ছে এই বিরোধ দ্রুত থামবে না এবং এটি দলের মধ্যে গভীর বিভেদের কারণ হয়ে উঠতে পারে।