রানীগঞ্জ।
আদিবাসী সমাজের গর্ব, ব্রিটিশবিরোধী ‘উলগুলান’ আন্দোলনের নায়ক, সমাজ সংস্কারক ও ‘ধরতি আব্বা’ বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মজয়ন্তীতে আজ পশ্চিম বর্ধমান জেলাজুড়ে উৎসবের আবহ। দেশের নানা প্রান্তের মতোই রানীগঞ্জের রাস্তাঘাটেও আজ ঐতিহ্য, আবেগ ও শ্রদ্ধার ঢেউ।
রবিবার সকাল থেকেই রানিসায়রের মোড়, ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে জমে ওঠে বিরসা মুন্ডা জন্মজয়ন্তী পালন সমিতির আয়োজন। উপস্থিত ছিলেন বহু আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বিরসা মুন্ডার প্রতিকৃতিতে মাল্যার্পণ, ঢোল–মাদলের তালে নাচ, গান, শোভাযাত্রা—সব মিলিয়ে যেন ছোট্ট এক সাংস্কৃতিক মহোৎসব।
১৮৭৫ সালে রাঁচির উলিহাতু গ্রামে জন্ম নেওয়া বিরসা মুন্ডা ছিলেন মুন্ডা জনজাতির অহংকার। ১৮৯৯-১৯০০ সালের ‘উলগুলান’ বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি আদিবাসীদের জমি, অধিকার ও সংস্কৃতি রক্ষার লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাই তাঁর প্রতি আজও জনজাতি সমাজের অগাধ শ্রদ্ধা—যা আজকের অনুষ্ঠানে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
⭐ বিধায়ক তাপস ব্যানার্জির উপস্থিতিতে বাড়ল অনুষ্ঠানের মর্যাদা
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রানীগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক তাপস ব্যানার্জি। তিনি প্রথমে সিদো–কানহু মূর্তি এবং পরে বিরসা মুন্ডার ছবিতে মাল্যদান করেন। এরপর তিনি বলেন—
“আদিবাসী সমাজ শুধু পশ্চিম বর্ধমান নয়, গোটা বাংলার সাংস্কৃতিক শক্তি। তাঁদের পাশে সরকার সবসময় আছে।”
🎶 নৃত্য–গান–সাধারণ সভা: আদিবাসী সংস্কৃতির ঝলক
মঞ্চে আদিবাসী তরুণ-তরুণীদের নাচ, ঐতিহ্যবাহী তীর-ধনুক প্রদর্শন, ঢোলের তালে তালে গান—পুরো এলাকা ভরে ওঠে উৎসবের রঙে। সাধারণ সভায় বিরসা মুন্ডার জীবনকথা তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা।
👥 উপস্থিত ছিলেন—
- কান্দন হাঁসদা
- মতিলাল সরেন
- হীরালাল সরেন
- রামলাল টুডু
- সোনারাম হাঁসদা
- জনার্দন কড়া
- ডঃ নগেন্দ্রনাথ সরেন
সহ আরও অনেকে।
🌼 শ্রদ্ধার্ঘ্য থেকে উৎসবে পরিণত—বিরসা মুন্ডার প্রতি আবেগে ভেসে উঠল রানীগঞ্জ
উপস্থিত মানুষজনের কথায়—
“ধরতি আব্বা শুধু একজন নেতা নন, আমাদের অস্তিত্বের প্রতীক।”
তার ১৫০তম জন্মজয়ন্তীকে ঘিরে আদিবাসী সমাজের ঐক্য, আবেগ ও সাংস্কৃতিক গর্ব আজ রানীগঞ্জকে অন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে দিল।
বিরসা মুন্ডার জীবনের বার্তা—অধিকার, সংগ্রাম ও আত্মগৌরব—আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।












